গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? এই নির্বাচন কেবল কিছু পদে ভোট দেওয়া নয়। এটি শিক্ষার্থীদের নিজেদের অধিকার আদায়ের, নিজেদের সমস্যার কথা তুলে ধরার এবং ক্যাম্পাসের উন্নয়নে সরাসরি অংশ নেওয়ার একটি প্ল্যাটফর্ম। যখন একটি ছাত্র সংসদ থাকে, তখন শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে প্রশাসনের কাছে নিজেদের দাবি-দাওয়া তুলে ধরতে পারে। এতে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ক উন্নত হয় এবং ক্যাম্পাসে একটি সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ তৈরি হয়। এই নির্বাচনটি তাই কেবল একটি ভোটের হিসাব নয়, এটি ভবিষ্যতের নেতৃত্ব বিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া। আজকের তরুণরাই আগামী দিনের রাষ্ট্রপরিচালনার কারিগর। তাদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত হওয়া জরুরি। এই নিবন্ধে আমরা গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর আদ্যোপান্ত আলোচনা করব।

২. বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির গৌরবময় ইতিহাস: শিকড়ের সন্ধানে
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে ছাত্র সমাজের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গৌরবময়। যখনই অন্যায়, অবিচার বা বৈষম্য মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, ছাত্র সমাজ সম্মিলিতভাবে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। তাদের এই প্রতিবাদ কখনো রাজনৈতিক পরিচয়ে ছিল, আবার কখনো নির্দলীয় অবয়বে। কিন্তু প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের মূল লক্ষ্য ছিল জনস্বার্থ ও জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা। ছাত্র আন্দোলন তাই এদেশের গণতান্ত্রিক চেতনা ও স্বাধিকার আন্দোলনের অন্যতম সূতিকাগার।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান, এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রদের অংশগ্রহণ ছিল অসাধারণ। ছাত্ররাই স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলন করেছিল। এই আন্দোলনগুলোতে ছাত্র সংসদগুলো কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ছিল এই আন্দোলনের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র। ১৯৫৩ সালে প্রথমবারের মতো সরাসরি শিক্ষার্থীদের ভোটে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে এস. এ. বারী এবং জুলমত আলী খানের মতো নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছিলেন। এটি ছিল ছাত্র আন্দোলনের সোনালী অধ্যায়। সেই সময়ে ছাত্র রাজনীতি ছিল জনগণের পক্ষে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে।
ছাত্র সমাজের এই বীরত্বপূর্ণ ইতিহাস প্রমাণ করে, যখন রাজনীতি তার মৌলিক উদ্দেশ্য থেকে বিচ্যুত হয়, তখন ছাত্র সমাজই জাতিকে সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয়। তারা দেশের যেকোনো সংকটে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন গড়ে তুলেছে এবং সফল হয়েছে। সাম্প্রতিককালে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এটি ছিল একটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, যা সাধারণ মানুষের সমর্থন পেয়ে ১৫ বছরের আওয়ামী শাসনের অবসান ঘটিয়েছিল।
৩. সোনালী ইতিহাস থেকে বর্তমানের শূন্যতা: কেন স্তব্ধ ছিল ছাত্র সংসদ?
গৌরবময় অতীত থেকে বর্তমানের প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। কেন বাংলাদেশের বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল? এর মূল কারণ হলো রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি। ছাত্র সংগঠনগুলো মূল রাজনৈতিক দলগুলোর হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। ফলে শিক্ষাঙ্গন থেকে গণতান্ত্রিক চর্চা প্রায় হারিয়ে যায়। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের অভাবে নেতৃত্বের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়।
ছাত্র সংসদের অনুপস্থিতি ক্যাম্পাসে এক ধরনের ক্ষমতাশূন্যতা তৈরি করেছে। এই শূন্যতা পূরণের জন্য রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রভাব দেখা যায়। এর ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর অস্বাভাবিক নির্যাতন, র্যাগিং, শারীরিক ও মানসিক হয়রানি এবং ভর্তিবাণিজ্যের মতো অপকর্ম নিত্যদিনের চিত্র হয়ে ওঠে। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ক্ষমতা দখলের লড়াই শিক্ষাঙ্গনে বিভেদ ও সহিংসতার জন্ম দিয়েছে। এমনকি এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় অনেক ক্যাম্পাসে সাংবাদিকদেরও হয়রানির শিকার হতে হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ার পেছনে একটি বড় কারণ হলো, ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠনগুলো মনে করে যে নির্বাচন হলে তাদের একতরফা আধিপত্য কমে যাবে। এটি কেবল তাদের মনমানসিকতার প্রতিফলন নয়, বরং এক ধরনের অগণতান্ত্রিক প্রবণতা। যখন ছাত্ররাজনীতি দলীয় স্বার্থ এবং ক্ষমতার লড়াইয়ে সীমাবদ্ধ থাকে, তখন এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থকে উপেক্ষা করে এবং তাদের আস্থা নষ্ট করে। এই পরিস্থিতিতে একটি নির্বাচিত ছাত্র সংসদের অনুপস্থিতিতে ক্যাম্পাসের সমস্যার সমাধান করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই সমস্যা সমাধানের জন্যই প্রয়োজন একটি সুস্থ ও স্বচ্ছ ছাত্র সংসদ নির্বাচন।
৪. গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচন: এক আশার আলো
বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে যেখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন একটি প্রায় বিলুপ্ত ধারণা, সেখানে গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন একটি আশার প্রদীপ হয়ে এসেছে। গণ বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থবারের মতো এই নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে। এই ধারাবাহিকতা প্রমাণ করে যে, এই প্রতিষ্ঠানটি গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশে বিশ্বাসী। এই নির্বাচনের মাধ্যমে তারা শুধু একটি ছাত্র সংসদ গঠন করছে না, বরং একটি সুস্থ ও স্বচ্ছ নির্বাচনী সংস্কৃতির দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।
২০২২ সালের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রধান উদ্দেশ্য ও লক্ষ্য হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে নেতৃত্বের উন্মেষ ঘটানো। এর কার্যক্রমগুলো মূলত সহশিক্ষা কার্যক্রম (Co-Curricular Activities) পরিচালনার উপর নির্ভরশীল। এর মধ্যে রয়েছে নবীনবরণ, বিদায় অনুষ্ঠান, বিভিন্ন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক দিবস উদযাপন, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং শিল্প, সাহিত্য ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা। এই লক্ষ্যগুলো গতানুগতিক ছাত্র রাজনীতির সহিংস ও ক্ষমতার কেন্দ্রিক উদ্দেশ্য থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। এটি একটি সুস্থ ধারার ছাত্র সংগঠন, যা নির্দলীয় এবং শিক্ষা সহায়ক।
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন-২০২৫ এর তফসিল ছিল অত্যন্ত স্বচ্ছ এবং সুসংগঠিত। ভোটার তালিকা প্রকাশ থেকে শুরু করে চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ সুনির্দিষ্টভাবে নির্ধারিত ছিল। এটি একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার প্রতি গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের গভীর প্রতিশ্রুতির প্রমাণ। নিচে একটি সারণীর মাধ্যমে এই নির্বাচনের সময়রেখা তুলে ধরা হলো:
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন-২০২৫ এর সময়রেখা
| ধাপ | তারিখ | মন্তব্য |
| তফসিল ঘোষণা | আগস্ট ২০২৫ | নির্বাচনের কার্যক্রমের সূচনা |
| প্রাথমিকভাবে বাছাইকৃত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ | ৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | |
| প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | প্রার্থীদের সাথে খোলামেলা আলোচনা |
| চূড়ান্ত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | |
| ভোট গ্রহণ ও গণনা | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | |
| চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ |
এই সুনির্দিষ্ট সময়রেখা প্রমাণ করে, গণ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই নির্বাচনকে কতটা গুরুত্ব সহকারে দেখে। প্রার্থীরা তাদের প্রচারণায় গণতান্ত্রিকভাবে নিজেদের ইশতেহার তুলে ধরতে পারে। এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আস্থা তৈরি করে এবং তাদের এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করে।
৫. নির্বাচনী লড়াই: প্রার্থীর ইশতেহার থেকে ভোটারের প্রত্যাশা
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাঠে প্রার্থীরা সাধারণত প্যানেলভিত্তিক এবং স্বতন্ত্রভাবে অংশগ্রহণ করে। তবে এখানে মূল রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তির চেয়ে শিক্ষার্থীদের নিজেদের সমস্যা সমাধানে আগ্রহ বেশি দেখা যায়। প্রার্থীরা তাদের ইশতেহারে বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন, যা শিক্ষার্থীদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রাকে প্রভাবিত করে। এসব প্রতিশ্রুতির মধ্যে থাকে উন্নত পরিবহন ব্যবস্থা, মানসম্মত ক্যাফেটেরিয়া, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রমের প্রসার, এবং পড়ালেখার সহায়ক পরিবেশ তৈরি করা।
এই নির্বাচনে ভোটার অর্থাৎ সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা থাকে অনেক। তারা এমন প্রতিনিধিদের বেছে নিতে চায়, যারা তাদের কথা শুনবে এবং তাদের পক্ষে কথা বলবে। শিক্ষার্থীরা চায় এমন একজন নেতা, যিনি কেবল নির্বাচিত হয়েই হারিয়ে যাবেন না, বরং তাদের সমস্যার সমাধানে নিরন্তর কাজ করে যাবেন। তারা চায় একটি প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস, যেখানে বিতর্ক, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসহ সকল সহশিক্ষা কার্যক্রম নির্বিঘ্নে পরিচালিত হবে। এই প্রত্যাশাগুলো পূরণ করা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, তাদের কেবল প্রতিশ্রুতি দিলেই চলবে না, বাস্তবায়নও করতে হবে।
৬. নির্বাচনী আচরণ বিধি: স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ
যেকোনো গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মূল ভিত্তি হলো সুষ্ঠু আচরণবিধি। গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন-এর জন্যও একটি সুস্পষ্ট আচরণবিধি রয়েছে, যা নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করে তোলে। এই আচরণবিধি প্রার্থীরা কীভাবে প্রচারণা চালাবে, কত টাকা খরচ করতে পারবে, এবং ভোট গ্রহণের সময় কী ধরনের নিয়ম মানতে হবে—তা নির্দিষ্ট করে দেয়। এটি নিশ্চিত করে যে কোনো প্রার্থী বা প্যানেল যেন অনৈতিক সুবিধা না পায়।
নির্বাচনকালীন সময়ে ক্যাম্পাসে শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আচরণবিধি রাজনৈতিক অস্থিরতা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় সভার আয়োজন করা হয়। এটি ক্যাম্পাসের পরিবেশ শান্ত রাখতে সাহায্য করে। নির্বাচন কমিশন তার তৎপরতার সাথে কাজ করে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে। কোনো অভিযোগ উঠলে তা খতিয়ে দেখা হয় এবং উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এতে পুরো নির্বাচনী প্রক্রিয়ার ওপর শিক্ষার্থীদের আস্থা বাড়ে।
৭. ভোট গ্রহণ থেকে ফলাফল: একটি বিশদ বিশ্লেষণ
নির্বাচনের দিন গণ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উৎসবমুখর পরিবেশ থাকে। শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে আসে। এটি একটি উন্নত গণতন্ত্রের প্রতি তাদের গভীর আগ্রহের প্রতিফলন। ভোট গ্রহণ শেষে ভোট গণনা ও ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এই প্রক্রিয়াটি হয় দ্রুত ও স্বচ্ছ।
ভোটারদের উপস্থিতি এবং আগ্রহের হার নিয়ে একটি সম্ভাব্য চিত্র নিচে দেওয়া হলো:
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন-২০২৫ এর ভোটারদের আগ্রহের হার !(https://i.imgur.com/eE131P4.png)
এই গ্রাফটি দেখায় যে, শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগে কতটা আগ্রহী। এই ফলাফলের তাৎপর্য শুধু জয়-পরাজয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ওপর সাধারণ শিক্ষার্থীদের যে আস্থা ও প্রত্যাশা, তার প্রতিফলন ঘটে এই ফলাফলে।
৮. একটি কেস স্টাডি: ডাকসু নির্বাচন ২০২৫
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন-এর প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ কেস স্টাডি হতে পারে। ডাকসু নির্বাচন, যা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি বড় ঘটনা, সেখানে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ ও বিতর্ক ছিল, তা আমরা দেখতে পারি। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর এটি বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতিতে প্রথম নির্বাচনী আয়োজন। এই নির্বাচনে প্রায় ৬৫৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে এবং ১০৬ জন জমা দেয়।
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ও ডাকসু নির্বাচনের মধ্যে একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ করলে পার্থক্যগুলো স্পষ্ট হয়। ডাকসু নির্বাচনে নানা প্যানেলভিত্তিক জোটের আধিপত্য দেখা যায়। উদাহরণস্বরূপ, সাদিক কায়েম এবং এস এম ফরহাদের মতো নেতারা “ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট” এর ব্যানারে নির্বাচিত হন। নির্বাচনে বিতর্ক ও অভিযোগের ঘটনাও কম ছিল না। একাত্তর টিভিসহ বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে এসব অনিয়মের খবর প্রকাশিত হয়েছে। আবার কিছু কিছু মহল থেকে গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে নির্বাচনকে বিতর্কিত করারও চেষ্টা করা হয়েছে।
ডাকসু নির্বাচন ঘিরে ওঠা এই বিতর্কগুলো প্রমাণ করে যে, ছাত্র রাজনীতিতে রাজনৈতিক প্রভাব একটি বড় সমস্যা। মাহমুদুর রহমান মান্নার মতো নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা মন্তব্য করেছেন যে, ছাত্র সংসদ নির্বাচন জাতীয় নির্বাচনের ফল বদলে না দিলেও কিছুটা প্রভাব ফেলবে। এটি ইঙ্গিত দেয়, ছাত্র সংসদগুলো কতটা শক্তিশালী রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করতে পারে।
নিচে একটি সারণীর মাধ্যমে এই দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচনের একটি তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরা হলো:
ডাকসু ও গণ বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন: একটি তুলনামূলক বিশ্লেষণ
| বৈশিষ্ট্য | গণ বিশ্ববিদ্যালয় | ডাকসু |
| ইতিহাস | চতুর্থবারের মতো নিয়মিত নির্বাচন | দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত |
| রাজনৈতিক প্রভাব | নির্দলীয়, শিক্ষা সহায়ক উদ্দেশ্য | রাজনৈতিক দলগুলোর লেজুড়বৃত্তি ও জোট |
| মূল লক্ষ্য | সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ | শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়, জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা |
| চ্যালেঞ্জ | শান্তিপূর্ণ ও গঠনমূলক পরিবেশ বজায় রাখা | সহিংসতা, কারচুপি ও কোন্দলের ঝুঁকি |
এই তুলনা থেকে স্পষ্ট, গণ বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব গঠনতন্ত্রের মাধ্যমে একটি সুস্থ, অরাজনৈতিক ধারার ছাত্র সংসদ গড়ার চেষ্টা করছে, যা ডাকসু নির্বাচনের মতো রাজনৈতিক কোন্দলের বাইরে।
৯. ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে ও বিপক্ষে যুক্তিতর্ক
ছাত্র সংসদ নির্বাচন শিক্ষাঙ্গনের জন্য কতটা জরুরি, তা নিয়ে বিতর্ক দীর্ঘদিনের। এর পক্ষে ও বিপক্ষে উভয় ধরনের যুক্তিই রয়েছে।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের পক্ষে যুক্তি:
- নেতৃত্বের বিকাশ: ছাত্র সংসদ নির্বাচন তরুণদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী যেমন: দায়িত্ববোধ, সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জনমত গঠনের ক্ষমতা বিকাশে সহায়তা করে।
- গণতান্ত্রিক চর্চা: এটি শিক্ষার্থীদেরকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সঙ্গে পরিচিত করে তোলে এবং তাদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ গড়ে তোলে।
- অধিকার আদায়ের প্ল্যাটফর্ম: ছাত্র সংসদ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবিগুলো প্রশাসনের কাছে তুলে ধরার একটি শক্তিশালী মঞ্চ হিসেবে কাজ করে।
- শিক্ষাঙ্গনে প্রাণ: ছাত্র সংসদ থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সহশিক্ষা কার্যক্রম যেমন: খেলাধুলা, বিতর্ক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা আয়োজন করা সহজ হয়।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিপক্ষে যুক্তি:
- রাজনৈতিক কোন্দল ও সংঘাত: ছাত্র সংসদ নির্বাচন রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তির কারণে ক্যাম্পাসে সহিংসতা ও কোন্দল বাড়াতে পারে।
- পড়ালেখার বিঘ্ন: রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত জড়িয়ে পড়া তাদের পড়ালেখায় বিঘ্ন ঘটাতে পারে।
- স্বচ্ছতার অভাব: অনেক সময় নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় দুর্নীতি, ভর্তিবাণিজ্য ও সিটবাণিজ্যের মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডের ঝুঁকি থাকে।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের সুবিধা ও অসুবিধা
| সুবিধা | অসুবিধা |
| নেতৃত্বের উন্মেষ | রাজনৈতিক দলের প্রভাব |
| গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিকাশ | কোন্দল ও সহিংসতা |
| শিক্ষার্থীদের অধিকার প্রতিষ্ঠা | ভর্তি ও সিট বাণিজ্য |
| সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া কার্যক্রমের প্রসার | পড়ালেখায় বিঘ্ন |
| ছাত্র-শিক্ষক সুসম্পর্ক | অস্বচ্ছ নিয়োগ ও পক্ষপাতিত্ব |
১০. দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন: সুস্থ ছাত্র রাজনীতি ও শক্তিশালী নেতৃত্ব
একটি সুস্থ ছাত্র রাজনীতি গড়ে তুলতে হলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন আনতে হবে। শুধু ছাত্র সংসদ নির্বাচন দিলেই হবে না, এটিকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ অনুযায়ী লেজুড়বৃত্তির ছাত্ররাজনীতি এবং শিক্ষক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা জরুরি। এর পরিবর্তে এমন একটি পরিবেশ তৈরি করতে হবে যেখানে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব উঠে আসবে।
শিক্ষাঙ্গনের শান্তি ফিরিয়ে আনতে রাজনৈতিক বিবেচনায় উপাচার্যসহ বিভিন্ন পদে নিয়োগের সংস্কৃতি পরিবর্তন করা প্রয়োজন। শিক্ষক নিয়োগেও মেধার ভিত্তিতে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। ছাত্র সংসদকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে, যা কেবল শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবে। পাশাপাশি, সব হলগুলোতে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সিট বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে।
ছাত্র সংসদের মূল কাজ হলো সহশিক্ষা কার্যক্রমের প্রসার। ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিতর্ক ক্লাব, সেমিনার ও সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে শিক্ষার্থীদের শারীরিক, মানসিক এবং চিন্তাগত উন্নয়নে সহায়তা করা। একটি ছাত্র সংসদ যদি এই কাজগুলো সঠিকভাবে করতে পারে, তাহলেই তা শিক্ষার্থীদের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হবে। ডিজিটাল সাংবাদিকতা ও নতুন মিডিয়া নিয়ে জ্ঞানচর্চার জন্য https://dailyictpost.com -এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা করতে পারে।
১১. গণ বিশ্ববিদ্যালয়: কী হতে পারে আগামী দিনের রোডম্যাপ?
গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্বাচিত ছাত্র সংসদের সামনে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ থাকবে। তাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রত্যাশা পূরণ করা এবং ক্যাম্পাসে একটি গঠনমূলক পরিবেশ বজায় রাখা। তাদের কার্যক্রমগুলো দলীয় প্রভাবমুক্ত এবং স্বচ্ছ হতে হবে।
প্রশাসনের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে তারা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন সমস্যা যেমন: পরিবহনের অব্যবস্থাপনা, মানসম্মত ক্যাফেটেরিয়া, এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে। পাশাপাশি, তাদের নিয়মিতভাবে সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া এবং শিক্ষামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করা উচিত।
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ তার সফলতার মাধ্যমে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য একটি অনুকরণীয় মডেল হতে পারে। যদি তারা প্রমাণ করতে পারে যে, একটি ছাত্র সংসদ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে পরিচালিত হলে তা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কতটা কার্যকর হতে পারে, তাহলে এটি বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়েও ছাত্র সংসদ নির্বাচন ফিরিয়ে আনতে প্রেরণা জোগাবে।
১২. প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQ)
১. গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন কী?
গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হলো গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে তাদের নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচনের একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এটি শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষা এবং তাদের দাবি-দাওয়া বাস্তবায়নের জন্য কাজ করে।
২. গণ বিশ্ববিদ্যালয়ে কি ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত হয়?
হ্যাঁ। গণ বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থবারের মতো এই নির্বাচন আয়োজন করতে যাচ্ছে। এটি প্রমাণ করে যে, এই প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিতভাবে গণতান্ত্রিক চর্চা বজায় রাখে।
৩. ছাত্র সংসদ কেন প্রয়োজন?
ছাত্র সংসদ প্রয়োজন কারণ এটি শিক্ষার্থীদের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে, যা তাদের অধিকার নিয়ে কথা বলতে এবং ক্যাম্পাসের উন্নয়নে অংশ নিতে সাহায্য করে। এটি শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব বিকাশেও ভূমিকা রাখে।
৪. ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে কী ধরনের নেতৃত্ব গড়ে ওঠে?
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে এমন নেতৃত্ব গড়ে ওঠে যারা বাস্তব সমস্যার সমাধান করতে পারে, দায়িত্ববোধ সম্পন্ন হয় এবং সবার মতামতকে সম্মান করে। এটি ভবিষ্যতের যোগ্য রাজনীতিবিদ তৈরিতেও সহায়তা করে।
৫. গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের গঠনতন্ত্র কী?
গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র-২০২২ অনুযায়ী, এই সংসদ একটি নির্দলীয় ও শিক্ষা সহায়ক সংগঠন হিসেবে কাজ করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ঘটানো।
৬. বাংলাদেশের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে কি ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়?
দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের বেশিরভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন বন্ধ ছিল। তবে সম্প্রতি ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনগুলো এখন ধীরে ধীরে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরিয়ে আনার আলোচনা চলছে।
৭. ছাত্র রাজনীতির সাথে ছাত্র সংসদের পার্থক্য কী?
ছাত্র রাজনীতি রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি হতে পারে, যেখানে ক্ষমতার লড়াই এবং দলীয় স্বার্থ মুখ্য। অন্যদিকে, ছাত্র সংসদ হলো শিক্ষার্থীদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের একটি বৈধ প্ল্যাটফর্ম, যা সরাসরি শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে।
৮. গণ বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনে প্রার্থীর যোগ্যতা কী?
প্রার্থীদের নির্বাচনের জন্য কিছু নির্দিষ্ট যোগ্যতার প্রয়োজন হয়। তাদেরকে একটি প্রার্থী আবেদনপত্র পূরণ করতে হয় এবং কিছু নিয়মাবলী মেনে চলতে হয়।
৯. ছাত্র সংসদ নির্বাচন কি জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলে?
হ্যাঁ, ছাত্র সংসদ নির্বাচন জাতীয় রাজনীতিতে প্রভাব ফেলে। এটি ভবিষ্যতের রাজনৈতিক নেতৃত্ব তৈরি করে এবং জনগণের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনা জাগ্রত করে। এটি জাতীয় নির্বাচনের ফল বদলে না দিলেও কিছুটা প্রভাব ফেলতে পারে।
১০. গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন-২০২৫ এর ফলাফল কী?
গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন-২০২৫ এর চূড়ান্ত ফলাফল ২০২৫ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল।
১৩. উপসংহার: একটি নতুন ভোরের অপেক্ষায়
বাংলাদেশের শিক্ষাঙ্গনে গণ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন একটি নতুন দিগন্তের উন্মোচন। এই নির্বাচন কেবল একটি ভোট নয়, বরং এটি ভবিষ্যতের নেতৃত্ব তৈরির একটি শক্তিশালী মঞ্চ। এটি প্রমাণ করে যে, যথাযথ কাঠামো, নিয়মকানুন এবং সদিচ্ছা থাকলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব। যে সমাজে গণতান্ত্রিক চর্চা থাকে না, সেখানে সুনাগরিক তৈরি হয় না।
বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি তার গৌরবময় অতীত থেকে বিচ্যুত হয়ে এক কলুষিত পথে হেঁটেছে। গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রতিষ্ঠানের আন্তরিক প্রচেষ্টা এই পরিস্থিতিকে বদলে দিতে পারে। এই নির্বাচন বাংলাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সুস্থ গণতান্ত্রিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার একটি প্রেরণা হয়ে উঠুক, এই আমাদের প্রত্যাশা।
Outbound Links:
- https://www.du.ac.bd/du_post_details/ducsu/24729
- https://www.prothomalo.com/opinion/letter/goumyka972
- https://www.jugantor.com/tp-editorial/136864
- https://dailyinqilab.com/editorial/article/718288
- https://bn.wikipedia.org/wiki/ঢাকা_বিশ্ববিদ্যালয়_কেন্দ্রীয়_ছাত্র_সংসদ_নির্বাচন,_২০২৫
- https://bdtoday.net/opinion/58225
- https://www.bssnews.net/bangla/national/171312
- https://gonouniversity.edu.bd/গণ-বিশ্ববিদ্যালয়-কেন্দ্র-13/
- https://www.dainikamadershomoy.com/details/0199679350c33
- https://www.youtube.com/watch?v=bvG-_GmrdqU
Please don’t forget to leave a review of my article.