ভাল মানের চাকরি না পাবার সেরা ১০টি কারণ

আপনি কি সরকারি বা যে কোন সরকারি বা বেসরকারি চাকরি খুঁজছেন? সামান্য কিছু বাধাগ্রস্থতার কারণে আপনি সেই সোনার হরিণের কাছে যেতে পারছেন না। এক্ষেত্রে একদমই হতাশ হবেন না। মনে রাখবেন, সবারই কিছু দুর্বলতা আছে। আবার অন্যদিকে অনেকের মধ্যে কিছু ব্যতিক্রম গুণাবলী রয়েছে। সোনার হরিণ মানে সরকারি চাকরি পেতে হলে এই দুর্বলতাকে শক্তিকে রুপান্তরিত করতে হবে। আজ আমি আপনাদের জন্য ভাল মানের চাকরি না পাবার সেরা ১০টি কারণ তুলে ধরব যার কারণে আপনি সেই সোনার হরিণের দেখা পাচ্ছেন না। খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন আপনার সেই বাধা আর বিপত্তি।

ভাল মানের চাকরি না পাবার সেরা ১০টি কারণ
ভাল মানের চাকরি না পাবার সেরা ১০টি কারণ

চাকরি না পাবার সেরা ১০টি কারণ

চাকরি না পাবার সেরা ১০টি কারণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

Here is a nice presentation on unexpected and top 10 reasons not to get a good job now a days.

তো আসুন আমরা এখন আলোচনা করব চাকরি না পাবার ১০ টি কারণ।

হয়তবা এই পোস্টটি আপনাকে সাহায্য করবে বাংলাদেশের সরকারি ব্যাংকের স্কেলসহ বেতন-ভাতাদি কেমন

 প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবঃ

যদি আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে স্বপ্নের চাকরি পাবার কোন সুযোগ থাকে অথবা যদি আপনার মনে কোনো ত্রুটি থাকে অথবা আপনি মনে করেন যে আপনি সেই কাজের জন্য উপযুক্ত নন, তাহলে উদ্বেগ এবং হীনমন্যতা দূরে সরিয়ে দিন। এসব হীনমন্যতা, উদ্বেগ, আবেগের কারণে আমাদের নিজেকে বিভিন্ন উপায়ে ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে। তাই সরকারি বা বেসরকারি চাকরি পেতে হলে আপনাকে অতীতে গঠনমূলক কাজের অভিজ্ঞতার আলোকে বিভিন্ন ধরণের সমস্যা সমাধানের জন্য নিজেকে আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানের নিকট রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করুন। চাকরি পাবার জন্য আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রতিষ্ঠানে সিভি পাঠানোর সময় আপনার পূর্বের চাকরির অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিন, এতে নতুন প্রতিষ্ঠান বা অফিসে কাঙ্ক্ষিত অবস্থানের জন্য অভিজ্ঞতা হিসেবে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

আপনি যে চাকরিতে কাজ করার জন্য আবেদন করেছেন সে সম্পর্কে আপনার অভিজ্ঞতা খুব কম এবং অন্যান্য যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ আপনাকে চাকরি দিচ্ছেনা। এক্ষেত্রে সাক্ষাত্কারের সময় আপনার অন্যান্য দক্ষতা উল্লেখ করুন। নিজেকে এমনভাবে উপস্থাপন করুন যাতে মনে হয় যে আপনি নতুন কিছু শেখার বিষয়ে খুবই আন্তরিক এবং আপনি এই নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট বিষয়ে অভিজ্ঞতার ঘাটতিটুকু পূরণ করতে পারবেন। মনে রাখবেন, কোনো কোনো সময়ে অনভিজ্ঞতা আপনার জন্য সুবিধা বয়ে নিয়ে আসতে পারে। সাক্ষাৎকারের সময় আপনি বুঝাতে সক্ষম হবেন যে আপনি যতই অনভিজ্ঞ হোন না কেন, আপনার কথার ফুলঝুরি দিয়ে বুঝিয়ে দিন যে আপনি অনভিজ্ঞ হলেও চাকরিটা পাবার পর সেই অনভিজ্ঞতাকে কাটিয়ে উঠবেন বা আপনার অনভিজ্ঞতাকে মানিয়ে নিন।

এমনও তো হতে পারে আপনার অনভিজ্ঞতাই আপনার সফলতা নিয়ে আসবে। আবার অন্যদিকে প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে আপনার সোনার হরিণটা আপনার কপালে নাও জুটতে পারে। তাই যে চাকরিতে আবেদন করতে চাচ্ছেন সেই চাকরির জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করে আবেদন করুন। তাই প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে চাকরি না হবার অন্যতম কারণ।

যারা ব্যাংকের চাকরি খুঁজছেন তাদের জন্য ব্যাংকে চাকরি পাওয়ার ৫টি সহজ ও অবিশ্বাস্য উপায়

 অনলাইনের সাহায্য না নেওয়াঃ

বর্তমান যুগ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। ইন্টারনেট বা অনলাইন ছাড়া আমরা একদমই অচল। একদিন ভাত না খেয়ে থাকতে পারি তবে একদিনও যেন আমাদের ফোনে ইন্টারনেট কানকেশন থাকা চাই। তাই একটি ভাল চাকরি পেতে হলে বই পুস্তকে সক্রিয় থাকার পাশাপাশি অনলাইন থেকে সহায়তা নিতে হবে। কিন্তু এটা অত্যন্ত দুঃখ ও পরিতাপের বিষয় যে অনেক চাকরি প্রার্থী ইন্টারনেট থেকে সহায়তা পেতে অনাগ্রহী বা ইন্টারনেট ব্যবহার করতে জানেন না।

আজকাল ইন্টারনেট পড়াশুনার এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে যে, যে কেউ বই ছাড়া যেকোন সময় যেকোন জায়গা থেকে অনলাইন থেকে পড়াশুনা বা চাকরির প্রয়োজনীয় বিষয় জেনে নিতে পারে। তাই অনলাইন থেকে সাহায্য নিয়ে নিজেকে সর্বদা আপডেট রাখতে হবে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে, চাকরিপ্রার্থীরা অনলাইন ব্যবহার না করে চাকরির ভাইভা দিতে গিয়ে অনলাইন ব্যবহারের অপারগতা স্বীকার করে ভাইভা থেকে ছিটকে যায় এবং প্রত্যাশিত চাকরি হয়না।

 মানসিকতার সমস্যাঃ

কথায় আছে, টাকার পেছনে পুরো দুনিয়া ঘোরে। কথাটি অনেকাংশে সত্য বলে মনে করি। তবে একটা চাকরি পেতে গেলে শুধু টাকা টাকা না করে চাকরি করার পাশাপাশি চাকরি যেন স্থায়ী হয় সেটার দিকে মনোযোগ দেওয়া উচিত। আমরা মনে করি, একটা চাকরি পেলেই মনে হয় শুধু টাকা আর টাকা পাব। কিন্তু বাস্তবতা অন্যরকম। বেতন স্কেল বা বেতন কম হলে অনেকেই চাকরিতে আবেদন করেন না।

কিন্তু এমন করা উচিত নয়। যেমনই চাকরি হউক না কেন বা চাকরিতে যেমনই বেতন হোক না কেন সেটাই আবেদন করে চাকরিটা অন্ততঃপক্ষে যেন হয়, সেটা খেয়াল রাখতে হবে। জেনে রাখা উচিত যে, দুনিয়ায় কোন কাজই ছোট নয়। আমাদের পরামর্শ হলো, ঐ কম স্যালারির চাকরিটা আপাতত করুন এবং ভাল চাকরির জন্য সেখান থেকেই চেষ্টা করুন। কম স্যালারির চাকরি কখনোই করবনা এমন মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

 চাকরিতে যাতায়াতের সমস্যাঃ

আমাদের দেশ সহ বিভিন্ন দেশে এই সমস্যা প্রকট আকারে দেখা দেয় যে, নিজের বাড়ি থেকে বা থাকার জায়গা থেকে চাকরির ক্ষেত্র অনেক দূর বিধায় চাকরিতে যাতায়াতের ক্ষেত্রে পরিবার থেকে অনেক বাধা আসে। অথবা, নিজের একটু সমস্যা হয় যে, কোম্পানি বা অফিস অনেক দূর তাই চাকরিটা করা সম্ভব হচ্ছেনা।

এমন ধারণা মন থেকে দূর করতে হবে। কারণ, নিজের অবস্থান থেকে অফিস যত দূরেই হউক না কেন চাকরিটা করতেই হবে। এমন মানসিকতা মনে পুষিয়ে রাখলে কখনো চাকরি হবেনা। তখন দেখবেন চাকরি আপনার কাছ থেকে অনেক দূরে চলে গেছে। তাই চাকরিতে যাতায়াতের সমস্যা কাটিয়ে উঠার জন্য নিজের বাসা অফিসের কাছে নিতে হবে।

 পরীক্ষা দিতে ভয় পাওয়াঃ

বাংলাদেশের সাধারণ চাকরি প্রার্থীদের সবচেয়ে সাধারণ সমস্যা হলো ছোট চাকরি হোক বা বড় চাকরি হোক আবেদন করার পর চাকরির পরীক্ষা দিতে ভয় একটা সাধারণ সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে চাকরি প্রার্থী চাকরি পরীক্ষা দিতেই ভয় পায় সেই প্রার্থী কিভাবে চাকরি পাবে। সরকারি বা বেসরকারি যেকোন চাকরিই হউক না কেন আপনাকে চাকরির পরীক্ষায় বসতেই হবে।

চাকরি পরীক্ষা দিতে যদি ভয় পান তাহলে আপনার কপালে চাকরি জুটবেনা। মনে রাখবেন যত চাকরির পরীক্ষা দিবেন ভাল ভাল চাকরি পাবার সক্ষমতা আপনার ততই বেড়ে যাবে। কারণ, যে চাকরির পরীক্ষা দিলেন সেই চাকরির প্রশ্নগুলো অন্য পরীক্ষায় বারবার আসে। এতে আপনার চাকরি পাবার আশা অনেকাংশে বেড়ে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এর ব্যতিক্রম চিত্র দেখা যায় তাই বেকারত্ব দিন দিন বাড়ছে।

৬। সাধারণ জ্ঞানের প্রতি অদক্ষতাঃ 

সাধারণ জ্ঞানের প্রতি অদক্ষতা অনেক সময় চাকরি না পাওয়ার বড় কারণ হতে পারে। চাকরির দুনিয়ায় শুধু ডিগ্রি থাকলেই চলে না। প্রতিদিনের ঘটনা, দেশের অবস্থা, প্রযুক্তি, অর্থনীতি — এসব বিষয়ে জ্ঞান থাকা জরুরি। ইন্টারভিউতে অনেক সময় প্রশ্ন করা হয় সাধারণ জ্ঞানের উপর। প্রার্থী যদি এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারে, নিয়োগকর্তার কাছে তার দক্ষতা কম মনে হয়। কারণ, সাধারণ জ্ঞান একজন মানুষের চিন্তাশক্তি ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেয়।

যে ব্যক্তি খবর জানে না, সমাজ বা দেশ সম্পর্কে অবহিত নয়, তার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতাও দুর্বল হয়। কর্মক্ষেত্রে হঠাৎ কোনো সমস্যা এলে সে দ্রুত সমাধান দিতে পারে না। এতে তার উপর আস্থা রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। অন্যদিকে, যার সাধারণ জ্ঞান ভালো, সে যেকোনো আলোচনায় আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অংশ নিতে পারে। সে নতুন বিষয় বুঝতে পারে সহজে। সহকর্মী ও বসের সঙ্গে যোগাযোগও হয় আরও সাবলীল। অনেক সরকারি ও বেসরকারি চাকরির পরীক্ষায় সাধারণ জ্ঞানের প্রশ্ন থাকে। যদি কেউ নিয়মিত খবর না পড়ে, বই না পড়ে বা আপডেট না থাকে, তাহলে সেসব পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়বে।

এভাবেই সাধারণ জ্ঞানের অভাব সরাসরি চাকরি পাওয়ার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। তাই চাকরি পেতে হলে শুধু একাডেমিক পড়াশোনা নয়, চারপাশের জগত সম্পর্কেও জানতে হবে। রোজ কিছু সময় খবর পড়া, সাম্প্রতিক বিষয় জানা এবং সাধারণ বিষয়গুলো শেখা দরকার। সাধারণ জ্ঞানে দক্ষতা বাড়ালে আত্মবিশ্বাসও বাড়বে, চাকরির সুযোগও বৃদ্ধি পাবে।

৭। সারাদিনের ডায়রি করে না রাখাঃ 

সারাদিনের ডায়রি না রাখা অনেক সময় জীবনে অদৃশ্য বাধা তৈরি করে। বিশেষ করে যারা চাকরি খুঁজছেন, তাদের জন্য এটা আরও গুরুত্বপূর্ণ। ডায়রি মানে শুধু লেখা নয়, নিজের সময়ের হিসাব রাখা। দিনে কী করলাম, কী শিখলাম, কী ভুল হলো — এসব লিখলে নিজের উন্নতি বোঝা যায়। যখন কেউ ডায়রি রাখে না, তখন নিজের দুর্বল দিকগুলো চোখে পড়ে না। ফলে, একই ভুল বারবার হয়। চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে গেলে পরিকল্পনা দরকার।

কিন্তু যাদের ডায়রি নেই, তারা পরিকল্পনা ধরে রাখতে পারে না। তারা জানে না গতকাল কী পড়েছে, আজ কী শেখা উচিত। এভাবে সময় নষ্ট হয়, মনোযোগ কমে যায়। ডায়রি রাখলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে। নিজের অগ্রগতি দেখা যায় চোখের সামনে। কোন ইন্টারভিউতে কী প্রশ্ন হয়েছিল, কেমন উত্তর দিয়েছিলাম — এসব লিখলে পরেরবার আরও ভালো করা যায়। ডায়রি না রাখলে মনে হয় “সব ঠিক আছে”, কিন্তু আসলে কাজের ফাঁকফোকর তৈরি হয়। যে সময়টায় নতুন স্কিল শেখা যেত, সেটা অজান্তে হারিয়ে যায়। নিয়োগদাতারা খোঁজেন শৃঙ্খলাবদ্ধ মানুষ, যারা নিজের কাজের রেকর্ড রাখে।

যদি সেই অভ্যাস না থাকে, তারা বিশ্বাস হারায়। তাই ডায়রি লেখা ছোট বিষয় মনে হলেও, এটা বড় পরিবর্তন আনে। এটা নিজের উন্নতির আয়না। যারা নিয়মিত লেখে, তারা সময়কে ব্যবহার করতে শেখে। আর যারা লেখে না, তারা সময়ের দাস হয়ে পড়ে। চাকরি পেতে চাইলে প্রতিদিনের ডায়রি লেখা শুরু করুন। অল্প লিখুন, কিন্তু নিয়মিত লিখুন। আপনার জীবনে শৃঙ্খলা ও সাফল্য — দুটোই ধীরে ধীরে এসে যাবে।

৮। মানসিক চাপঃ

মানসিক চাপ বা স্ট্রেস আমাদের জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। তবে অতিরিক্ত মানসিক চাপ অনেক সময় চাকরি না পাওয়ার বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। মানসিক চাপ থাকলে আত্মবিশ্বাস কমে যায়। নিজের দক্ষতা নিয়েও সন্দেহ তৈরি হয়। ইন্টারভিউর সময় কথা জড়িয়ে যায়। চোখে-মুখে ভয় বা উদ্বেগ দেখা দেয়। ফলে ইন্টারভিউ বোর্ডে ভালো ইমপ্রেশন তৈরি হয় না। চাকরি পাওয়ার জন্য প্রয়োজন মনোযোগ, ইতিবাচক মনোভাব এবং আত্মবিশ্বাস। কিন্তু মানসিক চাপ এগুলোকে দুর্বল করে দেয়। চিন্তা বাড়লে ঘুম কমে যায়।

ঘুমের অভাবে মনোযোগ নষ্ট হয়। ফলে পরীক্ষায় বা ইন্টারভিউতে ভালো পারফর্ম করা সম্ভব হয় না। অনেকে দীর্ঘদিন চাকরি না পেয়ে হতাশায় ভোগেন। এই হতাশা আবার নতুন চাকরির চেষ্টা কমিয়ে দেয়। চাকরি খোঁজার উৎসাহ হারিয়ে যায়। এভাবেই একে একে আত্মবিশ্বাস ভেঙে পড়ে। মানসিক চাপ শরীরেও প্রভাব ফেলে। মাথা ব্যথা, ক্লান্তি, রাগ—এসব বেড়ে যায়। ফলে যেকোনো কাজেই মন বসে না। অন্যরা তখন ভাবতে পারে, আপনি অনির্ভরযোগ্য বা অস্থির।

চাকরি পাওয়ার জন্য শান্ত মন দরকার। নিজের ওপর বিশ্বাস রাখতে হয়। মানসিক চাপ কমাতে ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, এবং সময়মতো বিশ্রাম জরুরি। পজিটিভ চিন্তা ও ধৈর্য থাকলে সুযোগ একদিন আসবেই। সংক্ষেপে বলা যায়, মানসিক চাপ চাকরি না পাওয়ার একটি বড় কারণ হতে পারে। তবে একে নিয়ন্ত্রণে আনলে সাফল্য ধীরে ধীরে ধরা দেয়।

৯। অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসঃ

অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস অনেক সময় চাকরি না পাওয়ার অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আত্মবিশ্বাস ভালো, কিন্তু যখন সেটা সীমা ছাড়িয়ে যায়, তখন সমস্যা তৈরি হয়।

ইন্টারভিউতে আত্মবিশ্বাসী প্রার্থী সবসময় ভালো প্রভাব ফেলে। কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ইন্টারভিউয়ারের চোখে নেতিবাচক মনে হয়। এতে মনে হয়, প্রার্থী অহংকারী বা শেখার আগ্রহ কম।

অনেক সময় অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী মানুষ মনে করে, সে সব জানে। ফলে প্রস্তুতি নিতে চায় না। রিজিউমে ঠিকমতো সাজায় না, কোম্পানি সম্পর্কে জানে না। এতে ইন্টারভিউতে ভুল করে ফেলে।

অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস থাকলে প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে অতিরিক্ত ব্যাখ্যা দেয়। এমনকি ভুল উত্তর দিলেও সেটা ঠিক প্রমাণ করার চেষ্টা করে। এতে ইন্টারভিউ বোর্ডের কাছে তার আচরণ খারাপ লাগে।

কিছু ক্ষেত্রে এই আত্মবিশ্বাস টিমওয়ার্কে সমস্যা তৈরি করে। নিয়োগদাতারা এমন কাউকে চায়, যে সহকর্মীদের সাথে মানিয়ে চলতে পারে। কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী মানুষ অনেক সময় অন্যদের মতামতকে তুচ্ছ মনে করে।

নিজেকে প্রমাণ করতে গিয়ে অনেক সময় সে অন্যদের ছোট করে কথা বলে। এতে দলীয় পরিবেশ নষ্ট হয়। তাই কোম্পানি এমন কর্মী নিতে চায় না।

চাকরি পেতে হলে ভারসাম্যপূর্ণ আত্মবিশ্বাস থাকা জরুরি। আত্মবিশ্বাস দেখাতে হবে, তবে বিনয়ের সঙ্গে। শেখার আগ্রহ, শ্রদ্ধা এবং সহযোগিতামূলক মনোভাব থাকতে হবে।

মনে রাখতে হবে—আত্মবিশ্বাস সফলতার চাবি, কিন্তু অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস ব্যর্থতার কারণ। নিয়ন্ত্রিত আত্মবিশ্বাসই আপনাকে করবে সফল প্রার্থী।

১০। বারবার চাকরি পরিবর্তন করাঃ 

বারবার চাকরি পরিবর্তন করা অনেক সময় চাকরি না পাওয়ার বড় কারণ হয়ে দাঁড়ায়। কারণ, এটি নিয়োগকর্তার মনে সন্দেহ তৈরি করে যে প্রার্থী হয়তো স্থির নন বা এক জায়গায় দীর্ঘদিন থাকতে চান না। অধিকাংশ নিয়োগকর্তা এমন কর্মী চান যারা দীর্ঘমেয়াদে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। তাই সিভিতে যদি দেখা যায় কেউ ঘন ঘন চাকরি বদলাচ্ছেন, তাহলে তারা ভাবেন, এই ব্যক্তি হয়তো পরের কোম্পানিতেও বেশিদিন থাকবেন না।

ঘন ঘন চাকরি পরিবর্তনের ফলে কাজের স্থায়িত্ব ও দক্ষতা উন্নয়নের সুযোগ কমে যায়। প্রতিটি নতুন চাকরিতে মানিয়ে নিতে সময় লাগে, শেখার প্রক্রিয়াও থাকে দীর্ঘ। বারবার পদ পরিবর্তনের ফলে সেই অভিজ্ঞতা জমা হয় না, ফলে ক্যারিয়ারে ধারাবাহিকতা নষ্ট হয়। তবে সবসময় বিষয়টি নেতিবাচক নয়। কেউ কেউ ভালো সুযোগ, বেতন বৃদ্ধি বা ক্যারিয়ার উন্নতির জন্য চাকরি বদলান। যদি এটি পরিকল্পিতভাবে করা হয় এবং প্রতিটি পরিবর্তনের পেছনে যৌক্তিক কারণ থাকে, তাহলে নিয়োগকর্তারা সেটি ইতিবাচকভাবে নেন।

তবে অল্প সময়ের মধ্যে একাধিক চাকরি বদল করলে খারাপ প্রভাব পড়ে। ইন্টারভিউতে প্রায়ই জিজ্ঞাসা করা হয়—“আপনি এত দ্রুত কেন চাকরি বদলেছেন?” যদি উপযুক্ত ব্যাখ্যা না দেওয়া যায়, তাহলে প্রার্থীকে অনির্ভরযোগ্য মনে হতে পারে। তাই চাকরি পরিবর্তনের আগে নিজের ক্যারিয়ার লক্ষ্য ঠিক করে নেওয়া জরুরি। অন্তত এক থেকে দুই বছর একটি পদে কাজ করলে অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দুটোই বাড়ে এবং সিভিতেও ভালো ছাপ পড়ে। সংক্ষেপে বলা যায়, পরিকল্পনা ছাড়া বারবার চাকরি বদল করলে চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়, তবে লক্ষ্য নির্ভর ও যৌক্তিক পরিবর্তন সবসময় গ্রহণযোগ্য।

শেষকথাঃ

ভাল মানের চাকরি না পাওয়ার পেছনে মূলত দক্ষতার ঘাটতি, অভিজ্ঞতার অভাব, দুর্বল যোগাযোগ দক্ষতা, অনুপযুক্ত সিভি, অপ্রস্তুত ইন্টারভিউ পারফরম্যান্স, নেটওয়ার্কের অভাব, আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি, সময় ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, চাকরির বাজার সম্পর্কে অজ্ঞতা এবং বারবার চাকরি পরিবর্তনের মতো কারণগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সফল ক্যারিয়ার গড়তে হলে এসব দুর্বলতা চিহ্নিত করে ধীরে ধীরে উন্নতি করা জরুরি। নিজের যোগ্যতা, মনোভাব ও ধারাবাহিক প্রচেষ্টা থাকলে ভালো চাকরি পাওয়া একেবারেই অসম্ভব নয়। প্রতিটি ব্যর্থতা থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী সুযোগের জন্য নিজেকে আরও প্রস্তুত করাই সফলতার আসল চাবিকাঠি।

চাকরি না পাবার সেরা ১০টি কারণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।

Here is a nice presentation on unexpected and top 10 reasons not to get a good job now a days.

Visited 7 times, 1 visit(s) today

Leave a Comment